শুক্রবার, এপ্রিল ১৭, ২০০৯

ইহুদীবান্ধব বৃক্ষ জারকাদ

শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ
আকাশের চোখে পৃথিবীর রং কি? শুধুইকি নীল? না বিস্তৃত নীল জলরাশির মাঝে রয়েছে সবুজের ছোয়াও। এ সবুজের ছায়ায়ই যত উর্বরতা। এখানে প্রাণের স্পন্দন আর উচ্ছলতা। সবুজ অরণ্য পরম মমতায় আগলে রাখে মানুষকে। বেঁচে থাকার জন্য বিষুদ্ধ বায়ু সরবরাহ করে অনন্তকাল ধরে নিজের মধ্যে টেনে নেয় বিষ। মানুষ আর গাছের অবস্থান পাশাপাশি। পরস্পরের বেঁচে থাকা পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যম। ঝিরঝির বাতাসে পৃথিবীর সব গাছেরা কথা বলে একই সমীরণে। তবুও এদের মাঝে রয়েছে পার্থক্য। কোনটি ফল দেয়, কোনটি দেয় ফুল, কোনটি ফল ফুল দুটোই দেয়, আবার কোন গাছ এর কিছুই দেয়না। নানা আকার, বর্ণ এবং ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের গাছের সংখ্যা অগুণতি। মানব বসতি গাছকে নিয়েই। দৈনন্দিন জীবণের কাজ, আবেগ সব-ই গাছের সাথে সম্পৃক্ত। এ কারণে গাছেরাও নিজেদেরকে ঢেলে দিয়েছে মানুষের কাছে।
মানুষও পর্যবেক্ষণ করে চি‎ি‎হ্নত করতে পেরেছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের গাছকে। আর তাই গাছ সম্পর্কে রয়েছে নানা গল্প ও কিংবদন্তী। গাছ নিয়ে রয়েছে কবিতা ও গাণ। রয়েছে কালজয়ি সাহিত্য। মানুষের উপকারের জন্য যেমন গাছ, তেমনি কিছু গাছ মানুষের অপকারও করে। এমনকি আস্ত মানুষকে ফুটন্ত ফুলের ভেতর হজম করে ফেলার মতো গাছও পৃথিবীতেই বর্তমান। আমাজানের কিছু ভয়ঙ্করি লতানো গাছ পেচিয়ে হার গুড়ো করে দেয় মানুষের। আবার এমন কিছু গাছ রয়েছে যেগুলোর সাথে ধর্মীয় আবেগ জড়িত। গাছ রচনা করেছে ইতিহাস। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থেও বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে কিছু গাছের কথা। কিছু গাছ সম্বন্ধে বিচিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রয়েছে। তেমন একটি গাছের নাম জারকাদ। এটি ইহুদীবান্ধব গাছ। জারকাদ এবং ইহুদীদের সম্পর্ক নিয়ে রয়েছে হাদীসে। এমন একটি হাদীস হচ্ছে
“ মুসলমান এবং ইহুদীদের মাঝে যুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত বিচারের দিন আসবেনা। সে সময় ইহুদীরা পাথর এবং গাছে নিজেদেরকে আড়াল করবে, তখন পাথর এবং গাছেরা বলবে ‘হে মুসলমানবৃন্দ, হে আল্লাহর বান্দা, আমার আড়ালে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। তাকে হত্যা কর। একমাত্র জারকাদ গাছ এমন বলবেনা। কারণ এটি অন্যতম ইহুদীবান্ধব গাছ। ” (সহীহ মুসলিম, বই ০৪১, হাদিস নং ৬৯৮৫)
ইসরাইলীরা মুসলমানদেরকে সবচেয়ে শত্রæ হিসেবে গণ্য করে। পৃথিবী থেকে মুসলমানদের নাম-নিশানা মুছে ফেলার জন্য তারা মরিয়া। কিন্তু তারাই আবার রাসুল (সাঃ) এর হাদিসকে বিশ্বাস করে। এ বিশ্বাসের কারণেই সমগ্র ইসরাইলে তারা ব্যাপকভাবে জারকাদ লাগানোর কাজ শুরু করেছে। গড়ে তুলছে জারকাদ বন। অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করে মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে জারকাদ বৃক্ষ তাদের সাহায্য করবে।

জারকাদ এর বিস্তারিত
জারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ। জারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। বক্সথর্ন নাইটশেড পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। উষ্ণ ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এর ৯০টির মতো প্রজাতি রয়েছে। এগুলোর মাঝে ২০ প্রজাতি উত্তর আমেরিকায়, ৩০ প্রজাতি দক্ষিণ আমেরিকায়, ৩০ প্রজাতি আফ্রিকায়, ১০ প্রজাতি রয়েছে ইউরোপ এবং এশিয়ায়। তাছারা অস্ট্রেলিয়াতেও রয়েছে একটি প্রজাতি। লবণাক্ত পরিবেশ বক্সথর্নের জন্য উপযোগী। ইসরাইল ভ‚মধ্যসাগরের উপক‚লে বলে সেখানে লবণাক্ততা রয়েছে। বিষ্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে ইসরাইলের সীমান্তজুড়ে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই জারকাদ বৃক্ষ রোপন করা হচ্ছে। এই বৃক্ষ লাগানোর তাৎপর্যতো এটাই যে ইহুদীদের নিরাপত্তা দেবে এই বক্সথর্ন বা জারকাদ।
বারোমাস ফলদানকারী কাঁটাওয়ালা এসব ঝোঁপ প্রতিক‚ল পরিবেশেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। প্রতি বছর পুরনো পাতা ঝরে নতুন করে পাতা গজায়। সাধারণত জারকাদ বা বক্সথর্নের উচ্চতা হয় ১-৮ সেমি। বক্সথর্ন ফুল ফল দুটোই দেয়। কিছু ফুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে আবার কিছু থোকায় থোকায় শোভা পায়। প্রতিটি ফুলের ব্যাস ৬-২৫ মিমি। ফুল থেকে লাল, হলুদ, কমলা, রক্তবর্ণ অথবা কাল রংয়ের ফল হয়। ফলগুলো বেশ মাংসল এবং খাবার উপযোগী। প্রথম দিকে মিষ্টি স্বাদ হলেও শেষ দিকে কিছুটা তেঁতু স্বাদ অনুভ‚ত হয়।
অধিকাংশ প্রজাতির বক্সথর্ন কোসেক্সুয়াল। অর্থাৎ এগুলোর পরাগায়নের জন্য ২য় কোন ফুলের প্রয়োজন হয়না। একটি ফুলেই পুরুষ এবং স্ত্রীর বৈশিষ্ট বিদ্যমান। মরু এলাকায় এ ধরনের কাঁটা ঝুপ হয় বলে এগুলোর ফল নেকড়েদের সুস্বাদু খাবার এ কারণে জারকাদকে বলা হয় উলফ বেরি। তাছারা একে ডেজার্ট থর্ন, ক্রিস্টমাস বেরী, মেট্রিমনি বাইন নামেও ডাকা হয়।
চীন এবং কোরিয়ায় এগুলো থেকে বিভিন্ন ঔষধ, সুপ, জুস এবং এলকুহলিক উপাদান তৈরি হয়। চীনাদের কাছে এগুলো ঐতিহ্যগতভাবে ঔষধী গাছ। তারা জারকাদের ফল সিদ্ধ করে এগুলো থেকে বিভিন্ন উপাদেয় খাবার তৈরি করে।

ট্রি সার্টিফিকেট



JNF Tree Certificate

ইসরাইলে ইহুদীদের উন্নয়ন এবং নিরাপত্তার জন্য একটি তহবিল রয়েছে। যেটির নাম ‘জিউস ন্যাশনাল ফান্ড’। এই তহবিলের একটি ওয়েবসাইটে ইহুদীদের জন্য দান করার অনুরোধ রয়েছে। ইসরাইলের মাটিকে সবুজ করে তুলতে বিশ্ববাসির কাছে গাছ আহ্বান করা হয়েছে সেখানে। একটি গাছ লাগানোর জন্য যে খরচ হয়, এর সমপরিমাণ কেউ দান করলে তাকে একটি ট্রি সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এ সার্টিফিকেটটি ইহুদীদের সাথে বন্ধুত্বের স্মারক। জিউস ন্যাশনাল ফান্ড এর ওয়েবসাইটে কোন গাছের প্রতি তাদের বিশেষ আগ্রহ, সেটা সরাসারি উলেøখ নেই। তবে স¤প্রতি ইসরাইলের পাহাড়ে পরিকল্পিত জারকাদ বন তৈরি হওয়ায় জারকাদের দিকে তাদের দুর্বলতাটাই স্পস্ট হযে উঠে।
বর্তমানে বিশ্বের অনেক মুসলমানের সরাসরি স¤পৃক্ততা নেই কোরআনের সাথে। কোরআনকে তারা ধর্মীয় গ্রন্থ হিসেবে মেনে নিলেও পবিত্র এ গ্রন্থটিতে কি বলা হয়েছে, মানবজাতির জন্য রয়েছে কি দিক নির্দেশনা, তা খুঁজে দেখার প্রয়োজন মনে করেনা। অপরদিকে ইহুদীরা মুহাম্মদ (সাঃ), পবিত্র কোরআন ও মুসলমানদের স্বীকার করেনা এবং এ ধর্মকে ভ্রান্ত বলে প্রচার করে। কিন্তু কোরআন ও হাদীসকে এরা অধ্যয়ন করে মুসলমানদের চেয়ে বেশি গুরুত্বের সাথে। শুধু তাই নয় এসবের অনেককিছু নিয়ে তাদের গবেষনা রয়েছে এবং এ গবেষনালব্ধ জ্ঞান থেকে তারা উপকৃত হওয়ার চেষ্টা করে। ইতিহাসের পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া এ জাতিটি নতুন নতুন চমক দেখিয়ে তাক লাগায় বিশ্বকে।

প্রাচীরের অন্তরালে
The Western Wall, Jerusalem, Israel

... been the wall separating Israel ...
Wall Separating Israel
Israel wall Roadmap
ইহুদীদৈরকে বলা হয় অভিশপ্ত জাতি। এরা প্রতারণা ও চাতুর্যতায় পরিপক্ক। পবিত্র কোরআনে রয়েছে
“(মুসলমানগণ!) আসলে তাদের অন্তরে আলøাহ্র চেয়ে তোমরাই বেশি ভয়ের কারণ। কেননা তারা এক নির্বোধ স¤প্রদায়। ফলে আলøাহকে ভয় না ক’রে তোমাদেরকে বেশি ভয় করে।
এরা সকলে একযোগে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবেনা। এরা যুদ্ধ করবে কেবল সুরক্ষিত শহরে অভ্যন্তরে বা দুর্গ প্রাচীরের অন্তরালে থেকে। তবে, এরা যখন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করে তখন সে-যুদ্ধ হয় প্রচন্ড। তুমি মনে কর ওরা ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু ওদের মনের মিল নেই। এর কারণ এই যে, ওরা এক নির্বোধ স¤প্রদায়।” (সুরা হাশর ১৪-১৫)
বর্তমানে কোরআনের এই বাণিকেও ওরা প্রতীয়মান করছে সত্য হিসেবে। ইহুদীরা গোটা ইসরাইল সীমান্ত বেস্টনী দিচ্ছে এক সুরক্ষিত প্রাচীর তুলে।
নির্মীয়মান এ প্রাচীর ৬৮০ কিমি লম্বা। প্রাচীরের একেক জায়গায় একেকরকম বৈশিষ্ট এবং উচ্চতা। তবে কঠিন কনক্রিটের এ দেয়ালের উচ্চতা অধিকাংশ এলাকায় ৮ মিটার। উচ্চতার দিক দিয়ে এটি একসময়কার জার্মানীকে বিভক্তকারী বার্লিন প্রাচীরের দ্বীগুণ। প্রাচীরের ৩০০ মিটার পর পর ইহুদীরা নির্মাণ করেছে সামরিক পর্যবেÿণ টাওয়ার। আবার কোথাও কোথাও সুরক্ষিত কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে। কমপ্লেক্স এর ভেতরে মটির নিচের গভীরতা ৪ মিটার। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বৈদ্যুতিক তার, মোশন সেন্সর এবং সেনাপ্রহরার পথ রাখা হয়েছে। একসময় হয়তো এ প্রাচীরের ভেতরই বন্দী অবস্থায় থেকে তাদের লরতে হবে শান্তিকামী মানুষের সাথে। তারা কেবল নিরাপত্তা দেয়াল তুলেই ক্ষান্ত নয়। বরং সেই দেয়ালের আশপাশে লাগাচ্ছে জারকাদ বৃক্ষ।

ইহুদীদের আদি ইতিহাস


বর্তমানে ইসরাইল নামক রাষ্ট্র গঠন করে গোটা বিশ্ব নিয়ন্ত্রন করছে ইহুদীরা। স¤প্রতি তারা তাদের রাষ্ট্রের ষাট বছর উদযাপন করল মহা ধুমধামে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এদের এখন রয়েছে বিরাট আধিপত্য। এদের কথায় উঠবস করছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো। এদেরই কারণে জ্বলছে ফিলি¯িÍন। আর সে উত্তাপ ছড়িয়ে গেছে পৃথিবীর কানায় কানায়।
মানবেতর যুদ্ধ বাঁধানোর হুতা হিসেবে ইহুদীদের গলায় এখন ঝুলে আছে ‘ওয়ারস্ট ব্রান্ড’ এর মত লজ্জাজনক তকমা। অতীতে এদের প্রতি আলøাহর অনুগ্রহ থাকা সত্তেও এরা সীমালংঘন করেছে। সে ধারাবাহিকতা এখনো অব্যহত রয়েছে।
খুব সম্ভবত ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বে হিব্রæ ভাষায় কথা বলা জাতি এবং দক্ষিণ সারবিয়রা সিরিয়ার সিনাই উপত্যকা থেকে ক্যরাভিয়ান মরুভ‚মির পথ ধরে ছড়িয়ে যায়। স্থায়ী আবাসহীন এ জাতির প্রথম বাস ছিল সিনাই উপত্যকায়। সিনাই থেকে মেসুপটেমিয়ার সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায় তারা। এরপর সেখানে প্রভাব বিস্তার করে ‘সারগান’ নামক একজনের নেতৃত্বে রাজ্যগঠন করে। সে রাজ্যের রাজধানী ছিল আকাদ। সেখান থেকেই মূলত এদের ইতহাসের শুরু। ধীরৈ ধীরে তাদের প্রতাপ বারতে থাকে মধ্যপ্রাচ্যে। সিনাই থেকে আগতদেরকে দেখে আরো কিছু জাতিও মেসুপটেমিয়ায় চলে আসে।
ধারণা করা হয় আব্রাহাম, তথা ইব্রাহিমের (আ.) সময়কাল ছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ সালের দিকে। ইতিহাসের আদি উৎস থেকেই এই জাতির স্থায়ী কোন আবাস নেই। এ কারণেই হয়তো বাইবেলের পুরাতন নিয়মে ‘সৃস্টিতত্ত¡’তে ইব্রাহীমকে (আ.) পরিভ্রমণকারী জাতির নেতা বলা হয়েছে।
হযরাত ইব্রাহীম (আ.) এর পরবর্তী পুরুষ ছিলেন ইয়াকুব (আ.)। অন্য পরিভাষায় জেকব। ইয়াকুব বা জেকবের অপর নাম ছিল ইসরাইল। সেই ইসরাইল নাম থেকেই এই জাতির নাম হয়েছে বনি ইসরাইল। অর্থাৎ ইসরাইলের বংশধর। বর্তমানে তাদের প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের নামও ইসরাইল।
জেকবের ১২ জন সন্তানের একজনের নাম ছিল হাবিরু। কেউ কেউ মনে করেন সেই হাবিরুরর নাম থেকেই হিব্রæ নামের উৎপত্তি।
বনি ইসরাইল-এ মুসা (আ.) এসেছিলেন নবী হিসেবে। এদের নবী মুসা (আ.)। তাঁর পরবর্তী নবী ইসা (আ.) ও মুহাম্মদ (সা.) কে ইহুদীরা নবী হিসেবে মেনে নেয়নি।

কোরআন, বাইবেল এবং ইহুদী

পবিত্র কোরানে রয়েছে “মুসা তার স¤প্রদায়কে বলেছিল, ‘হে আমার স¤প্রদায়! তোমরা স্মরণ করো আলøাহ্র অনুগ্রহ; তিনি তোমাদের মধ্য থেকে নবি করেছিলেন, তোমাদেরকে রাজ্যের অধিপতি করেছিলেন ও বিশ্বে যা কাউকেই দেন নি তা তোমাদেরকে দিয়েছিলেন। হে আমার স¤প্রদায়! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যে-পবিত্র ভ‚মি নির্দিষ্ট করেছেন সেখানে প্রবেশ করো আর পিছু হোটো না। হটলে, তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।’
তারা বলল, ‘হে মুসা! সেখানে এক দুর্দান্ত স¤প্রদায় রয়েছে, আর তারা সেখান থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত আমরা সেখানে প্রবেশই করব না। তারা সেখান থেকে বের হয়ে গেলে আমরা প্রবেবশ করব।’
যারা ভয় করেছিল তাদের মধ্যে দুজন, যাদের ওপর আলøাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন, তারা বলল, ‘তোমরা প্রবেশদ্বারে তাদের মোকাবিলা করো। প্রবেশ করতে পারলেই তোমাদের জয় হবে। আর তোমরা বিশ্বাসী হয়ে আ্লাহ্র ওপরই নির্ভর করো।
তারা বলল, ‘হে মুসা! তারা যতদিন সেখানে থাকবে ততদিন আমরা সেখানে প্রবেশ করবই না। সুতরাং তুমি ও তোমার প্রতিপালক যাও ও গিয়ে যুদ্ধ করো, আমরা এখানেই ব’সে থাকব।’
সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার ও আমার ভাই ছাড়া অন্য কারও ওপর আমার কর্তৃত্ব নেই: সুতরাং তুমি আমাদের ও সত্যত্যাগী স¤প্রদায়ের মধ্যে ফয়সালা ক’রে দাও।’
আলøাহ্ বললেন, ‘তবে এ চলিøশ বছর তাদের জন্য নিষিদ্ধ রইল, তারা পৃথিবীতে উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াবে। সুতরাং তুমি সত্যত্যাগী স¤প্রদায়ের জন্য দুঃখ কোরো না।” (মায়িদা ২০-২৬)।
বাইবেলের পুরাতন নিয়মে মুসা (আঃ) কে প্রদত্ত ঈশ্বরের কিছু বাণীর কথা রয়েছে। সেখানে ইহুদীদের ভবিষ্যৎ নীতিভ্রষ্টতা এবং তার ফলে তাদের উপরে বিচারদণ্ড নেমে আসার কথা প্রকাশ করা হয়েছে। ঈশ্বর জানালেন তারা যেন এই ভবিষ্যদ্বাণীকে একটা সংগীতের আকারে সংরÿণ করে, যেন সেটা ভবিষ্যৎ বংশধরদের কাছে সতর্কবানীরূপে কাজ করে। “পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, দেখ, তোমার মৃত্যুদিন আসন্ন, তুমি যিহোশুয়কে ডাক, এবং তোমরা উভয়ে সমাগম-তাম্বুতে উপস্থিত হও, আমি তাহাকে আজ্ঞা দিব। তাহাতে মোশি ও যিহোশূয় গিয়া সমাগম তাম্বুতে উপস্থিত হইলেন। আর সদাপ্রভু সেই তাম্বুতে মেঘ¯Íম্ভে দর্শন দিলেন, সেই মেঘ¯Íম্ভ তাম্বুদ্বারের উপরে স্থির থাকিল। তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, দেখ, তুমি আপন পিতৃপুরুষদের সহিত শয়ন করিবে, আর এই লোকেরা উঠিবে, এবং যে দেশে প্রবেশ করিতে যাইতেছে, সেই দেশের বিজাতীয় দেবগণের অনুগমনে ব্যভিচার করিবে, এবং আমাকে ত্যাগ করিবে, ও তাহাদের সহিত কৃত আমার নিয়ম ভঙ্গ করিবে। সেই সময়ে তাহাদের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ প্রজ্বলিত হইবে, আমি তাহাদিগকে ত্যাগ করিব ও তাহাদের হইতে আপন মুখ আচ্ছাদন করিব, আর তাহারা কবলিত হইবে, এবং তাহাদের উপরে বহুবিধ অমঙ্গল ও সঙ্কট ঘটিবে, সেই সময়ে তাহারা বলিবে, আমাদের উপর এই সম¯Í অমঙ্গল ঘটিয়াছে, ইহার কারণ কি ইহাই নয়, যে আমাদের ঈশ্বর আমাদের মধ্যবর্ত্তী নহেন? বা¯Íবিক তাহারা অন্য দেবগণের কাছে ফিরিয়া যে সকল অপকর্ম্ম করিবে, তন্নিমিত্ত সেই সময়ে আমি অবশ্য তাহাদের হইতে আপন মুখ আচ্ছাদন করিব। এখন তোমরা আপনাদের জন্য এই গীত লিপিবদ্ধ কর, এবং তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে ইহা শিক্ষা দেও, ও তাহাদিগকে মুখ¯Í করাও, যেন এই গীত ইস্রায়েল-সন্তানগণের বিরুদ্ধে আমার সাক্ষী হয়। ...” -(দ্বিতীয় বিবরণ: অনুচ্ছেদ৩১, পদ১৪-২০)। পরবর্তীতে ২২-২৯ পদে রয়েছে “ পরে মোশি সেই দিবসে ঐ গীত লিপিবদ্ধ করিয়া ইস্রায়েল-সন্তানগণকে শিক্ষা দিলেন। আর তিনি নূনের পুত্র যিহোশূয়কে আজ্ঞা দিয়া কহিলেন, তুমি বলবান হও ও সাহস কর, কেননা আমি ইস্রায়েল সন্তানগণকে যে দেশ দিতে দিব্য করিয়াছি, সেই দেশে তুমি তাহাদিগকে লইয়া যাইবে, এবং আমি তোমার সহবর্ত্তী হইব। আর মোশি সমাপ্তি পর্য্যন্ত এই ব্যবস্থার কথা সকল পু¯Íকে লিখিবার পর সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকবাহী লেবীয়দিগকে এই আজ্ঞা করিলেন, তোমরা এই ব্যবস্থাপু¯Íক লইয়া তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকের পার্শ্বে রাখ, ইহা তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীর জন্য সেই স্থানে থাকিবে। কেননা তোমার বিরুদ্ধাচারিতা ও তোমার শক্তগ্রীবতা আমি জানি, দেখ, তোমাদের সহিত আমি জীবিত থাকিতেই অদ্য তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধাচারী হইলে, তবে আমার মরনের পরে কি না করিবে? তোমরা আপন আপন বংশের সম¯Í প্রাচীনবর্গকে ও কর্ম্মচারীকে আমার নিকটে একত্র কর, আমি তাহাদের কর্ণগোচরে এই সকল কথা বলি, এবং তাহাদের বিরুদ্ধে আকাশমন্ডল ও পৃথিবীকে সাÿী করে। কেননা আমি জানি, আমার মরনের পরে তোমরা একেবারে ভ্রষ্ট হইয়া পড়িবে, এবং আমার আদিষ্ট পথ হইতে বিপথগামী হইবে, আর উত্তরকালে তোমাদের অমঙ্গল ঘটিবে, কারণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ, তাহা করিয়া তোমরা আপনাদের হ¯Íকৃত কার্য্য দ্বারা তাঁহাকে অসন্তুষ্ট করিবে।” মুসা (আঃ) এর এ গীতের উপসংহারে ইস্রায়েলকে সতর্ক করা হয়েছে যে, তাদের ভবিষ্যৎ অবিশ্ব¯Íতা বিদ্রোহ ও নীতিভ্রষ্টতা জাতির উপরে ঈশ্বরের কঠোর বিচারদণ্ড নিয়ে আসবে।
পবিত্র কোরআন এবং বাইবেলের বর্ণনায় অবিশ্ব¯Í, নীতিভ্রষ্ট এবং অশান্তিসৃস্টির হোতা ইহুদীরা অভিশপ্ত এক জাতি। কোন এক উন্মাদনায় সওয়ার হয়ে পৃথিবীতে এরা বইয়ে দেয় রক্তের ধারা। তারপর আবার নিজেদেরকে গুটিয়ে নেয় রহস্যের জালে। এসব নির্মম আগ্রাসন ও চাতুর্যতার স্বাক্ষী পাথর এবং বৃক্ষরাজীর ভ‚মিকাও হবে ইহুদী বিরুধী। কোথাও আশ্রয় হবেনা জেনেই হয়তো শেষ অবলম্বনের জন্য তারা ইসরাইলের ভ‚মিকে সবুজ করে তুলছে জারকাদ দিয়ে। ইহুদীবান্ধব জারকাদকেই ভেবে নিয়েছে শেষ অবলম্বন হিসেবে।

৭টি মন্তব্য:

নামহীন বলেছেন...

Gharkad, The friend of Jews!
How think, You are great Moshahid.
-Sagor.

নামহীন বলেছেন...

very nice Idea. Go ahed.
-Kamrul.

নামহীন বলেছেন...

fine.
-Limon

কামরুল হাসান বলেছেন...

এ তথ্য অনেকেরই জানা নেই। তোমাকে ধন্যবাদ এগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য

Unknown বলেছেন...

অনেক সুন্দর কিছু মূল্যবান কথা, আমাদের জানতে সহজগিতা করার জন্য ধন্যবাদ।

Unknown বলেছেন...

মাশাআল্লাহ তথ্যবহুল একটি পোষ্ট,,, shukhrea for post

Unknown বলেছেন...

Ato sundor information deyar jnno thank's