বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২০, ২০১১

সারা আঁখি পাতা


সেই মেয়েটি দস্যি মেয়ে
পাতায়, ফলে, ফুলে
দোদোল দোদোল দোলে

পাতাদ্বীপ ঝাড়ু দেয়
দীঘল দীঘল চুলে

সেই মেয়েটি গেছো মেয়ে
গাছে গাছে ঘোরে,
কিম্বা হাওয়ায় ওড়ে

সারা আঁখি পাতা
তার পাতাদ্বীপ জুড়ে

শুক্রবার, অক্টোবর ০৭, ২০১১

জন্ম ধোলাই


শোনা যাচ্ছে আগামী ৮ অক্টোবর ছড়াকার জগলুল হায়দারের জন্মদিন। ব্যাপারটার সত্যতা নিরূপন করার জন্য আরেক ছড়াকার শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ গিয়েছিলেন তার কাছে। ছড়ায় ছড়ায় তাদের কথোপকথন এখানে তুলে ধরা হলো-



প্রশ্ন-১
জগলুল হায়দার,
যুৎসই কায়দার
ছন্দ ও মাত্রা
মিল দিয়ে লিখে যান
ছড়া আর কবিতা।

আপনার ছন্দ
আর সব মন্দ
লেখনীর যাত্রা
কিভাবে শুরু হয়
বলে দিন সবি তা।

উত্তর :
থ্যাঙ্কস ভাই আপনাকে
লেগে গেছে তাপ নাকে
সাক্ষাতে আইসা;
ঠিক আছে এই আমি
সারা দিন নিশি-যামি
ছড়া লিখি ঠাইসা।

তবে লাগে ধন্দ
ছড়া লেখা মন্দ
এই কথা শুইনা
দেখান তো মন্দ কী
আঙ্গুলে গুইনা!

প্রশ্ন : ২
ছড়াকাররা মন্দ না তো
মন্দ বলি কাকে
খোঁচা মারে আলাভোলা
শান্ত মানুষটাকে।

ছড়া হলো শাণদার
ভীতিকর অস্ত্র
আলাভোলা বানদার
খুলে নেয় বস্ত্র।

ছড়াকারের ছড়ায় থাকে
নাশকতার বন্দনা
তবুও বলেন, আপনি মশাই
ছড়া লেখা মন্দ না?

উত্তর :
আলাভোলা পরান খোলা
মানুষগুলার দোষ নাই
ছড়াকারও কাড়েন না তো
তাদের মুখের রোশনাই।
কিন্তু যারা মুখোশ পরা
মুখে যাদের পলেস্তরা
তাদের কথা অন্য
ছড়াকারের অস্ত্র ঘোরে
কেবল তাদের জন্য।

বিপ্লব আর নাশকতার
মাঝেও ফারাক অল্প না
ছড়া নিয়ে তাই অহেতুক
আজগুবি এই গল্প না!

প্রশ্ন-৩
আপনি তো এক প্রকৌশলী
কুশল করেন পেশায়
তবুও দেখি সুযোগ হলেই
আড্ডাবাজির নেশায়;
বুঁদ হয়ে যান কিসের টানে
বলুন দেখি কানে কানে।

উত্তর :
পেশায় আমি যা-ই হই না
ছড়া আমার নেশায়
আমায় যেন সর্বদা কে
ছড়ার সাথে মেশায়!

মিশতে মিশতে মিশ্যা গেলাম
এখন জানে প্রাণে
বুঁদ হই তাই ছড়াতে ভাই
বলছি কানে কানে।

প্রশ্ন-৪
লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ
আপনি তো নন নারী
গোপন বলার সাহস আছে
উদোম করে হাঁড়ি?

সবার আগে বলুন দেখি
টান করে বুক-সিনা
অক্টোবরের আট তারিখে
জন্মেছিলেন কি না?

এখন বয়স কত চলে
বল্লে আরো ভালো
প্রমাণসহ বলতে হবে
জন্ম নেয়ার সালও।

উত্তর :
সাহস বেচা পুরুষ আমি
সাহস বেচেই খাই
আমার ছড়ায় মিনমিনে ভাব
তাই তো মোটেও নাই।
সাহস নিয়ে বলছি শুনুন
অক্টোবরের আটে
ওঁয়াও ওঁয়াও এসেছিলাম
এই পৃথিবীর হাটে।

আমগো দেশে বয়স মানে
এসএসসি যা বলে
সেই বয়সের মালাই নাকি
প্রায় সবারই গলে।

পয়ষট্টিতে জন্মে বয়স
দুই কুড়ি ছয় পূর্ণ
অনেক আগেই করেছি তাই
এই ট্র্যাডিশন চূর্ণ।
মারফতিতে আবার বলি
না যদি ভাই কমান;
বয়স আমার সত্যি তবে
এ সভ্যতার সমান!

প্রশ্ন -৫
সাহস আছে জানি সেটা
ছড়ার ভাষা পড়ে
জন্মেছিলেন বলুন দেখি
কোন সে আতুড় ঘরে?

উত্তর :
এই শহরের মালিবাগে
মায়ের পেটে এসে
পাক ভারতের যুদ্ধ দিনে
গিয়েছিলাম ফেঁসে।
মাকে বাবা পাঠিয়ে দিলে
জামালপুরের গাঁয়ে
দেশের বাড়ি জন্মেছিলাম
ফুল-প্রকৃতির ছায়ে।

প্রশ্ন ৬ :
আপনি নাকি ফান ম্যাগাজিন
একাই নিলেন দখল
দিলেন নাকি পাগল করে
যত্তো পাঠক সকল?

উত্তর :
একটা মোটে পাগলা গারদ
পাবনা যদি ভরে
এই সওয়ালের জবাব দিতে
তাই কাঁপি ভাই ডরে!
পাগল করার ইচ্ছে মোটে
নাইকো আমার ভায়া
ছড়া লিখে চাইছি সবার
আদর স্নেহ মায়া।

দখল টখল প্রসঙ্গ নয়
প্রসঙ্গটা এই;
চাইছি কেবল সব জাগাতে
ছড়াই ছড়াতেই।

প্রশ্ন-৭
ছড়া লিখেন ভালো কথা
আর কি করেন শুনি
কখনও কি ইচ্ছে করে
করতে খুনোখুনি!

উত্তর :
মশায় যখন ভন ভন ভন
হামলে পড়ে বাড়িতে
তখন কিন্তু চাপড় দিয়ে
চাই সে মশা মারিতে।

পিঁপড়া যদি কামড়ে ধরে
ইভেন ঋষি মুনি
তারাও তখন যায়না হয়ে
হঠাৎ করেই খুনি?

খুনের রেকর্ড খারাপ না খুব
মারছি মশা-মাছি
এই শহরে আমরা যে ভাই
এসব নিয়েই আছি।

প্রশ্ন-৮
কখনও কি হাসতে গিয়ে
কান্না করেছেন
আবার সোজা চলতে গিয়ে
উল্টে পড়েছেন?

উত্তর :
হাসতে গিয়ে হাসলে বেশি
আসতে পারে কান্না
এই কথা তো বলে গ্যাছেন
কবেই রাজেশ খান্না!
হাসি তবে হিসাব করে
হিসাব করেই কাঁদি
দুটোই কিন্তু এই জীবনে
স্বর্ণ এবং চাঁদি!

সোজার মধ্যে উল্টো হওয়া
এতো ইজি নয়তো
তাই জীবনে উল্টে যেতে
মানুষ বিজি নয়তো।
কিন্তু আয়না দেখলে পরে
বুঝতে পারি ভুলটা
সোজা থেকেও তখন কেমন
লাগতে থাকে উল্টা।
ডান হাতটা বাম হয়ে যায়
বাম হাতটা ডান
বদলে ফেলে নিজ পজিশন
তেমনি চোখ ও কান!

প্রশ্ন-৯
আচ্ছা বাবু এবার বলুন
ছড়া লেখার মন্ত্র কি
লিখতে হলে লাগবে কোনো
খটর-মটর যন্ত্র কি?

উত্তর :
ডাক নামটা বাবু আমার
সেটাও গেছেন জেনে
প্রশ্ন দিলেন অবশেষে
সেই নামটাও এনে!
জানেন যখন বলছি শুনুন
এসব কথা বাজে,
ছড়া লেখায় যন্ত্র-টন্ত্র
লাগবে না তো কাজে।

লাগবে প্রথম প্রতিভা আর
চেষ্টা তারই পরে
লিখবে তারাই বুকে ছড়ার
তেষ্টা যারই-ধরে।

৫ অক্টোবর’২০১১ নয়া দিগন্ত’র সাপ্তাহিক ফান ম্যাগাজিন থেরাপিতে প্রকাশিত